ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিদ্বেষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো ফল আনবে না।

১৩ জানুয়ারি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সেনাবাহিনী পর্যায়ে সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই। আর রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করা যাবে তখনই, যখন ‘নির্বাচিত সরকার’ থাকবে।

গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে বাংলাদেশের। সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সেনাপ্রধানের সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করেন।

জবাবে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, ‘তিনি (বাংলাদেশের সেনাপ্রধান) বলেছেন কৌশলগত কারণে ভারত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।ভারতের দিক দিয়েও বিষয়টা একই। কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ভারতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।’

দুই দেশের সীমান্তের কথা বলতে গিয়ে মানচিত্রে ভারতের পাশে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ হলো আরেকটি দেশ, যাদের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত আছে। আপনারা যদি দেখেন, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছোট একটা অংশ, যার বড় অংশ ভারত দ্বারা বেষ্টিত এবং দক্ষিণ-পূর্ব অংশে মিয়ানমার। আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে, পরস্পরকে বুঝতে হবে। কোনো ধরনের বিদ্বেষ আমাদের কারও স্বার্থের জন্যই ভালো হবে না।’

দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো ‘সমস্যা নেই’ দাবি করে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, ‘যখন পরিবর্তনটা হলো (ক্ষমতার পালাবদল) তখন থেকেই আমি বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এমনকি গত ২৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সেও আমাদের কথা হয়েছে।’

আন্তঃবাহিনী সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে যদি বলতে হয়, সেটা আগের মতোই চলছে। আমাদের অফিসাররা সেখানে এনডিসিতে যোগ দিয়েছেন। ওই পক্ষ থেকেও কোনো সমস্যা নেই। শুধু একটা বিষয়, যৌথ মহড়া যেটা হতো, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেটা সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। যখনই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, আমাদের মহড়াও হবে।’

তথ্যসূত্র: দৈনিক খবরের কাগজ – ১৪.০১.২০২৫