
বাংলাদেশের কর্মীদের বিদেশে চাকরির সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। ২০২৪ সালে শেষ দিকে এবং চলতি বছরের প্রথম দিকে , প্রতি মাসে প্রায় একলাখের মতো করে কর্মী যাচ্ছেন, মুসলমানদের জন্য পবিত্র এই দেশটিতে।
সৌদিতে যেতে কর্মীদের সরকারি হিসেবে খরচ, ১লাখ ৮০হাজার টাকা। কিন্তু বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে, অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে কর্মীদের।
বিমানের টিকিটের দাম আগে কত ছিলো? কত বেড়েছে?
এভিয়েশন ও ট্রাভেল এজেন্ট ব্যবসার সাথে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেলো, এক সময় সৌদি আরবে উড়োজাহাজের ওয়ান ওয়ে টিকিটের দাম ছিলো ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে। কিন্তু সেই টিকিটের দাম এখন আকাশ চুম্বি। বেড়ে হয়েছে ৪৭ হাজার টাকা থেকে ৮১হাজার টাকার মধ্যে। ফলে, সৌদি যেতে সরকারের বেঁধে দেয়া খরচ যাই থাকুক না কেন, উড়োজাহাজের টিকিটের দামের কারণে দেশটিতে যেতে কর্মীদের খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু কেন বাড়ে বিমানের টিকিটের দাম?
সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপে জানা গেছে, সৌদিতে যেতে এয়ারলাইনস্ এর টিকিটের খরচ বেড়ে যায় নানান কারণে। সাধারণত বেশি মানুষ টিকিট কাটলে, তার বিপরীতে এয়ারলাইন্স ফ্লাইটের সংখ্যা কম হলে স্বাভাবিকভাবেই টিকিটের দাম বাড়ে। বছরের শেষ দিকে ও বছরের প্রথম দিককে বলা হয় পিক টাইম। এই সময়ে ব্যাপকহারে কর্মীরা যাচ্ছেন সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে। ফলে অতিরিক্ত চাহিদার কারণে, বাড়ছে এয়ারফেয়ার।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জেনারেল ম্যানেজার পাবলিক রিলেশনস্ কামরুল ইসলাম জানান, গত বছরের জুলাই থেকে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশীরা কমই যেতে পেরেছেন সৌদিতে। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত হয়ে আসায় অনেকেই আবার সৌদি যেতে শুরু করেছেন। এছাড়া, হঠাৎ করে অনেক বেশি সংখ্যক শ্রমিকদের চাকরি হচ্ছে সৌদিতে। ফলে তাদের যেতে হচ্ছে সৌদি আরবে। দুই এ মিলে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে বেড়ে গেছে প্লেনের ভাড়া।
হাই সিজন, ওমরাহ ও হজ্জ যাত্রীদের চাপে কী বাড়তে পারে টিকিটের দাম?
কামরুল ইসলাম জানালেন, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত এভিয়েশন সেক্টরের পিক টাইম। এই সময়টায় প্লেনে মানুষের যাতায়াত বেড়ে যায়। বছর শেষে মানুষ ছুটি পায়, দেশে আসে। শীতের সিজনে ওমরাহ মৌসুম শুরু হয়। সৌদি আরবে ওমরাহ যাত্রীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে রমজান মাসে অনেক মানুষ ওমরাহ করতে যান, যার ফলে, ফ্লাইটের চাহিদা বাড়ে এবং এয়ারলাইন্সগুলো ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। ২০২৫ সালের মার্চ মাসের শুরুটা রমজান দিয়ে। আর এবছর হজ্জ ৫ জুন।২০২৫ সালের প্রথম ছয়মাসই থাকছে হাই সিজন।ফলে, বছর প্রথম ছয়মাস সৌদিতে যেতে বিমানের টিকিটের খরচ বাড়তি থাকারই সম্ভাবনা।
এর বাইরে নানান কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে, ডলারের বিপরীতে টাকার মান পরে লেগেও বিমানের টিকিটের দাম বাড়তে পারে। তাছাড়া, অনেক যাত্রীরা সরাসরি ফ্লাইট না পেয়ে কাতার, দুবাই, তুরস্ক বা অন্য কোনো দেশের মাধ্যমে ট্রানজিট ফ্লাইট নেয়। এতে অতিরিক্ত ট্রানজিট ফি এবং দীর্ঘ পথের কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়। ডলার রেট বৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়ন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, সারচার্জ ও ট্যাক্স বাড়লেও, এয়ারফেয়ার বাড়তে পারে।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট।