কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী আহমেদ হুসেন ৯ মার্চ ঘোষণা করেছেন যে বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ২৭২.১ মিলিয়ন ডলার নতুন সহায়তা প্রদান করা হবে।

হুসেন এক বিবৃতিতে বলেন, "বাংলাদেশ এবং বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করতে কানাডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাস্থ্যসেবা, নারী ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা প্রদান করে আমরা বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করছি।"

এই সহায়তার অর্থ ১৪টি প্রকল্পে খরচ করা হবে, যা অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার এবং দাতাদের সহায়তার পরিচালিত হবে।

কানাডার এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীত অবস্থান তুলে ধরছে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের নতুন কার্যকারিতা নীতি অনুসারে মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা USAID-এর কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন।

ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা বৈদেশিক সহায়তাকে করদাতাদের অর্থের অপচয় বলে মনে করেন, এবং তারা দাবি করেন যে এই ধরনের ব্যয় মূলত উদারনৈতিক রাজনৈতিক এজেন্ডাকে সমর্থন করে। তবে, সমালোচকদের মতে, বৈদেশিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থানকে শক্তিশালী করে এবং অন্যান্য দেশের হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় সহায়ক হয়।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মার্কিন সহায়তা কর্মী ও সমর্থকরা আদালতে চ্যালেঞ্জ এনেছেন, দাবি করে যে কংগ্রেস অনুমোদিত একটি সংস্থাকে কার্যত বন্ধ করে দিয়ে তিনি তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন।

কানাডার সরকার যে বহুবর্ষীয় প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

-       নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য লিঙ্গ সমতা এবং যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা।

-       অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি।

-       জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধি।

-       নাগরিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসে উদ্যোগ গ্রহণ।

একটি প্রকল্প বিশেষভাবে "নার্সিং খাতে নারীদের ক্ষমতায়ন"-এর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে, যার জন্য কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান কোওয়াটার ইন্টারন্যাশনালকে তিন বছরের জন্য ৬.৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এই সহায়তা কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আহমেদ হুসেন এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লিবারেল সংসদ সদস্য পারম বেইন্স ভ্যাঙ্কুভারে এক অনুষ্ঠানে দেন, যেখানে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কানাডার ফেডারেল সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে বর্তমানে ১ লক্ষেরও বেশি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক বসবাস করছেন। আসন্ন বসন্তে লিবারেল সরকার নতুন নেতৃত্বে নির্বাচনের ডাক দিতে পারে, যা এই সহায়তা কার্যক্রমের রাজনৈতিক তাৎপর্যও নির্দেশ করে।

তথ্যসূত্র: গ্লোবাল নিউজ