Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জান্তা সরকারের নতুন কৌশল?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৫

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জান্তা সরকারের নতুন কৌশল?

বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। সর্বশেষ মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে 'ভেরিফায়েড' করেছে। তবে এটি নাগরিকত্ব নয়, বরং কেবল তাদের 'রেসিডেন্সি' বা অবস্থান স্বীকৃতি, যা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের মৌলিক দাবি পূরণ করে না।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গারা তাদের নিজ ভূমিতে নাগরিক হিসেবে ফিরতে চায়। কিন্তু মিয়ানমার তাদের স্থানান্তর করতে চায় ক্যাম্পে, যেখানে নাগরিক অধিকার থাকবে না।” ফলে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২৩ সালে তিন দফা প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, “৮ বছরে এক লাখ ৮০ হাজারকে ভেরিফায়েড করতে পারলে, বাকি সবাইকে ভেরিফায়েড করতে ৪০ বছর লাগবে।” তার ভাষায়, এটি মিয়ানমারের নতুন এক প্রতারণার কৌশল।

রোহিঙ্গা গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, “ভেরিফিকেশন নয়, এখন দরকার নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে সম্মানজনক প্রত্যাবাসন। জান্তা কৌশলে সময়ক্ষেপণ করছে।” অপরদিকে, রাখাইনের অধিকাংশ এলাকা বর্তমানে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, যেখানে মিয়ানমারের বাস্তব নিয়ন্ত্রণ নেই। সে ক্ষেত্রে প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আন্তর্জাতিক আলোচনায় এখন ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটির স্বীকৃতি আদায় হচ্ছে, যা দীর্ঘদিন অস্বীকার করে আসছিল মিয়ানমার। তিনি ‘FDMN’ শব্দ ব্যবহারের সমালোচনা করে বলেন, “এটি রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয় মুছে ফেলার কৌশল।”

বাংলাদেশ বারবার বলেছে, যদি মিয়ানমার প্রস্তুত থাকে, বাংলাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব ও মর্যাদার নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো প্রত্যাবাসনই টেকসই হবে না।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এখন কেবল ভেরিফিকেশনের পরিসংখ্যান নয়, বরং একটি ন্যায্য, মানবিক ও রাজনৈতিক সমাধানের দাবি।

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভ্যালে (সম্পাদিত)

Logo