সন্তানকে আমিরাতের সেরা স্কুলে ভর্তি করতে পারবেন বাংলাদেশের অভিভাবকরাও

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৪

সম্প্রতি আমিরাতে হাররো স্কুলের মতো বিশ্বখ্যাত একটি ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শাখা চালু করতে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এবার তারা সহজেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে। তবে এর জন্য কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, যেগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমিরাতের সেরা স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া:
আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমিরাত বরাবরই আকর্ষণীয় গন্তব্য। নতুন করে হাররো স্কুলসহ অন্যান্য সেরা ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক স্কুলগুলো আমিরাতে শাখা খোলার ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। এসব স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে তা হলো-
অনলাইনে আবেদন:
অধিকাংশ স্কুল এখন অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রে শিক্ষার্থীর পূর্বের শিক্ষা, অভ্যন্তরীণ ফলাফল এবং পিতা-মাতার আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ জমা দিতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ:
বেশির ভাগ সেরা স্কুল ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে। এতে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোর মৌলিক দক্ষতা পরীক্ষা করা হয়।
ইন্টারভিউ:
ভর্তি পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের ইন্টারভিউর জন্য ডাকা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর আচার-ব্যবহার, মনোভাব এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য যাচাই করে থাকে।
স্কুলে পড়ালেখার খরচ:
আমিরাতের সেরা স্কুলগুলো সাধারণত অত্যন্ত ব্যয়বহুল। খরচের বিষয়টি স্কুলের মান, অবস্থান এবং সুবিধার উপর নির্ভর করে। তবে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া যায়।
শিক্ষা খরচ:
প্রাথমিক স্কুল: প্রতি বছর প্রায় ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ AED (সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিরহাম) পর্যন্ত হতে পারে।
মাধ্যমিক স্কুল: প্রতি বছর প্রায় ৪০,০০০ থেকে ৭০,০০০ AED হতে পারে।
উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল: প্রতি বছর প্রায় ৫০,০০০ থেকে ১২০,০০০ AED।
অতিরিক্ত খরচ:
স্কুলের অতিরিক্ত খরচ হিসেবে থাকে বই, ইউনিফর্ম, পরিবহন এবং খাবার। এর খরচও প্রায় ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ AED হতে পারে।
অন্যান্য খরচ:
আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোর অনেক সময় বিভিন্ন ইভেন্ট, ট্যুর, এবং এক্সট্রা-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজের জন্য আলাদা খরচ ধার্য করে থাকে, যা বছরে প্রায় ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ AED হতে পারে।
ভিসা প্রক্রিয়া:
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আমিরাতে ভিসা প্রক্রিয়াও এক ধাপ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর জন্য কিছু মূল পদক্ষেপ রয়েছে-
স্টুডেন্ট ভিসা:
স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ সাধারণত শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করে। এই ভিসার মাধ্যমে শিক্ষার্থী আমিরাতে অবস্থান করতে পারবেন।
পিতা-মাতার ভিসা:
যেহেতু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সাথে থাকবে, তাদের পিতা-মাতার জন্যও কর্মসংস্থান বা রেসিডেন্ট ভিসা প্রয়োজন হতে পারে। অনেক স্কুল অভিভাবকদের জন্য কর্মসংস্থান ভিসা প্রক্রিয়া সহায়তা দেয়।
ডকুমেন্টস প্রয়োজন:
- পাসপোর্টের কপি
- স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ভর্তি পত্র
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্ট
- পিতা-মাতার আইডি বা প্রমাণপত্র
ভিসা প্রসেসিং:
সব ডকুমেন্ট ঠিক থাকলে সাধারণত ২-৪ সপ্তাহের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে।
বাংলাদেশি উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জন্য এখন আমিরাতে পড়াশোনার সুযোগ আরো সহজ হয়ে গেছে। বিশেষত হাররো স্কুলসহ বিশ্বের অন্যতম সেরা স্কুলগুলোতে ভর্তি হওয়া এখন অনেক বেশি সম্ভব, তবে এর জন্য কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলা এবং খরচের বিষয়টি আগে থেকেই মাথায় রাখা জরুরি।
বাংলাদেশি অভিভাবকরা যদি এই সুযোগ কাজে লাগাতে চান, তবে দ্রুত আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে হবে, যাতে তাদের সন্তানরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অর্জন করতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠতে পারে।
তথ্যসূত্র: খালিজ টাইমস, এআই