Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

চীনে চিকিৎসা নিতে যে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩০

চীনে চিকিৎসা নিতে যে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে

চীনে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভাষাগত সমস্যা, অতিরিক্ত ভিসা ফি, ব্যাংকে কমপক্ষে ১০ হাজার ডলার জমা রাখার বাধ্যবাধকতা ও উচ্চ বিমান ভাড়া- এসব বিষয় চীনে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পথে বাধা তৈরি করতে পারে।  

বাংলাদেশ থেকে চীনে চিকিৎসার জন্য যাওয়া রোগীদের সংখ্যা এখনো কম। তবে ভারতের ভিসা কড়াকড়ির পর চীনের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চীনের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা খরচ তুলনামূলকভাবে কম এবং মানের দিক থেকে উন্নত। তবে ভাষাগত সমস্যা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জটিলতা দূর করতে পারলে চীন বাংলাদেশের রোগীদের জন্য একটি ভালো গন্তব্য হতে পারে।  

চীনে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী রোগীদের জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন: ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, বিমানবন্দরে বাংলা ভাষাভাষী সহায়তাকারী রাখা, সাশ্রয়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা ও চিকিৎসা রিপোর্ট ইংরেজিতে প্রদান করা।  

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি ও দক্ষতা স্থানান্তর এবং জনবল প্রশিক্ষণের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে দেশের অভ্যন্তরে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।  

চীনে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পথে কিছু বিষয় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন মেডিকেল ট্যুরিজম সংশ্লিষ্টরা। রোগীরাও কিছু সমস্যার কথা বলছেন।

ট্র্যাক মেডির প্রধান নির্বাহী রাশেদুল হাসান বলেন, ভাষা, বাড়তি ভিসা ফি, ব্যাংকে কমপক্ষে ১০ হাজার ডলার থাকার বাধ্যবাধকতা এবং বিমান ভাড়াসহ কিছু বিষয় চীনে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পথে বাধা তৈরি করতে পারে।

যারা চীনে গেছেন, তাদের অনেকেই ভাষাগত সমস্যার কারণে অ্যারাইভাল কার্ড ফিলাপ করতে পারেননি। মেডিকেল ভিসায় আবেদনের সময় রোগী বা অ্যাটেনডেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে ১০ হাজার ডলার জমা থাকতে হবে। অথচ ভারতীয় ভিসা আবেদনে ২০০ ডলার, থাইল্যান্ডের জন্য দেড় লাখ টাকা থাকলেই হয়।

ঢাকা থেকে কুনমিংয়ের বিমান ভাড়া ৪০ হাজার টাকার বেশি। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে এয়ারপোর্ট ট্যাক্স অনেক, বিমান ভাড়া কমাতে না পারলে রোগীর খরচ বেড়ে যাবে।

রাশেদুল বলেন, চীনে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পথে যেসব বিষয় অন্তরায় হতে পারে, তা চিহ্নিত করেছেন তারা। এসব নিয়ে ঢাকায় চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। চীনের কর্মকর্তাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এগুলো হচ্ছে-

- চীনের ভিসা ফি থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ভারতের ভিসা ফির কাছাকাছি আনা।

- রোগী এবং অ্যাটেনডেন্টের ভিসা ৩-৪ দিনের মধ্যে ইস্যু করা।

- চীনের বিমানবন্দরে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা।

- বিমানবন্দরে রোগী ও স্বজনের সহায়তার জন্য বাংলাভাষী সহায়তাকারী রাখা।

- হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দর যাত্রীদের পিক-আপের ব্যবস্থা করা।

- দীর্ঘ সময় চীনে অবস্থানের জন্য সাশ্রয়ী আবাসনের ব্যবস্থা।

- বিভিন্ন বয়স-রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় আলাদা আলাদা হেলথ প্যাকেজের ব্যবস্থা রাখা।

- মেডিকেল রিপোর্ট চীনা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতে দেওয়া।

- চীনে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার আগে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকের সঙ্গে ভিডিও কনসালটিংয়ের ব্যবস্থা করা।

- প্রয়োজনীয় সুবিধাসম্পন্ন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা।

- কোনো রোগী চীনে মারা গেলে মরদেহ দেশে ফেরানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা।

- বিমানবন্দরে রোগীদের জন্য মোবাইল সিম কার্ডের ব্যবস্থা রাখা।

- চীনের হাসপাতালগুলো যেন রোগীদের আন্তর্জাতিক হেলথ ইন্স্যুরেন্স গ্রহণ করে, সেই ব্যবস্থা করা।

চীনে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য এই সুযোগটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। তবে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এই সহযোগিতাকে আরো কার্যকর করতে হবে।

তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর 

Logo