Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ইইউতে অনিয়মিত অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগরীয় রুটে শীর্ষে বাংলাদেশিরা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৯

ইইউতে অনিয়মিত অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগরীয় রুটে শীর্ষে বাংলাদেশিরা

অনিয়মিত পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে অভিবাসী আসার প্রবণতা গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে অন্তত ৩১ শতাংশ কমেছে৷ তবে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট হয়ে আসা অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা৷ ইউরোপীয় সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স ১১ এপ্রিল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে৷

সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সাতটি সীমান্ত দিয়ে ৪৪ হাজার ৭১৯ জন অনিয়মিত অভিবাসী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসেছেন৷ সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ হাজার ৬০০ বা ৩১ শতাংশ কম৷

সাতটি অভিবাসন রুটের তথ্য নিয়ে পরিসংখ্যানটি প্রকাশ করেছে ফ্রন্টেক্স৷ এগুলো হলো- পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুট, পশ্চিম আফ্রিকান রুট, সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট, পশ্চিম বলকান রুট, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুট, পূর্বাঞ্চলীয় স্থল রুট ও যুক্তরাজ্যমুখী রুট৷

ফ্রন্টেক্সের এমন পরিসংখ্যানে ইউরোপীয় দেশগুলো কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও ভিন্ন কথা বলছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷ ইইউর নীতিগুলোকে দায়ী করেছে তারা৷ বলছে, তিউনিসিয়া ও লিবিয়ার মতো দেশগুলোতে অভিবাসীদের উপর যে অন্যায়, নিপীড়ন চলছে, তা জেনেও চোখ বন্ধ রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

বছরের প্রথম তিন মাসে অভিবাসী আসার হার সবচেয়ে বেশি ৬৪ শতাংশ কমেছে পশ্চিম বলকান রুটে৷ আলবেনিয়া, সার্বিয়া, মন্টিনিগ্রো এবং উত্তর মেসিডোনিয়া মিলিয়ে পশ্চিম বলকান রুট হয়ে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২ হাজার ১১১৷ 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পূর্ব স্থল সীমান্ত অংশে অভিবাসী আসা সবচেয়ে বেশি কমেছে৷ তবে যুক্তরাজ্যমুখী অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে মাত্র চার শতাংশ৷

এ বছর এখন পর্যন্ত অনিয়মিত অভিবাসনের জন্য পূর্ব ভূমধ্যসাগর এবং পশ্চিম আফ্রিকান রুট দুটি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে৷ পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট হয়ে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৬৩০ জন অভিবাসী এসেছেন৷ এই পথে আসা অভিবাসীদের মধ্যে আফগানিস্তান, মিসর ও সুদানের অভিবাসীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি৷ তারপরও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সংখ্যাটি ২৯ শতাংশ কম৷

পশ্চিম আফ্রিকান রুটের অবস্থান দ্বিতীয়৷ প্রথম প্রান্তিকে ৯ হাজার ২০০ জন অভিবাসী এসেছেন এই পথ ধরে৷ ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ৩০ শতাংশ কমেছে৷ এই পথে সংখ্যায় বেশি এসেছেন মালি, সেনেগাল ও গিনির অভিবাসীরা৷

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট হয়ে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে সাড়ে ৮ হাজার অভিবাসী এসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে৷ এর বড় অংশটি ঢুকেছেন ইতালিতে৷ ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় অবশ্য এবার আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২৬ ভাগ কম৷ ফ্রন্টেক্স বলছে, সংখ্যা কমার পেছনে আবহাওয়া ছিল বড় কারণ৷

এই পথে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছেন বাংলাদেশিরা৷ এর পরেই রয়েছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিকেরা৷

এই পথে অনেক অভিবাসী সমুদ্র পাড়ি দিতে মানব পাচারকারীদের উপর নির্ভর করেন৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ৩৮৫ জন মানুষ সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছেন৷

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানও বলছে, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ হাজার ৪ জন অভিবাসী ইতালি পৌঁছেছেন৷ সংখ্যাটি গত দুই বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে৷ ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে এসেছিলেন ৩৩ হাজার ৭২০ জন অভিবাসী আর ২০২৪ সালের একই সময়ে সংখ্যাটি ১৬ হাজার ৯০৷

চলতি বছর ইতালিতে আসা অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম৷ ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৯৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছেন৷ বাংলাদেশের পরেই রয়েছে পাকিস্তানের নাম৷ দেশটির ১ হাজার ৪৮৭ জন নাগরিক এই সময়ে ইতালি পৌঁছেছেন৷

তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস

Logo