Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

বাংলাদেশিদের জন্য কি কঠিন হয়ে উঠবে ক্রোয়েশিয়ার শ্রমবাজার?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৩

বাংলাদেশিদের জন্য কি কঠিন হয়ে উঠবে ক্রোয়েশিয়ার শ্রমবাজার?

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো মধ্য-পূর্ব ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া শ্রমবাজারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুযোগ বাড়ছে৷ কয়েক বছর ধরে নির্মাণখাত, ট্যুরিজম, হোটেলসহ নানা খাতে চাকরি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেক শ্রমিক দেশটিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে৷

বাংলাদেশে মধ্য ইউরোপের এই দেশটির কোনো দূতাবাস নেই৷ কিন্তু দেশটির ব্যবসা খাতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়ছে৷ ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেতে আগ্রহী কর্মীদেরকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে যেতে হতো৷

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে ভিসা আবেদনে জমা নেওয়ার ঘোষণা দেয় ভিএফএস৷ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভিএফএস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংশ্লিষ্ট দেশের আইনি অনুমোদ স্বাপেক্ষে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করে থাকে৷ সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রতিনিধি হিসেবে তার আবেদনকারীদের বায়োমেট্রিক ডেটা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিসার আবেদন সংগ্রহ করে থাকে৷

কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ক্রোয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান প্রক্রিয়া কঠোর করতে যাচ্ছে৷ ক্রোয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপে বাংলাদেশের নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের একটি চিঠি ছড়িয়ে পড়ে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লেখা ওই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়৷ এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়৷

সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বলা হয়, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশের কর্মীদের ভিসা প্রদানের বিষয়ে কঠোর হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া সরকার৷

চিঠিটির সত্যতা জানতে নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বার বার ফোন করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি৷ তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ইনফোমাইগ্রেন্টসকে জানান, এ বিষয়ে তারা অবগত হয়েছেন৷

উল্লেখ্য, ক্রোয়েশিয়াতে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই৷ সরকারের নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত দূতাবাস ক্রোয়েশিয়াতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে৷

ক্রোয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ভেচেরাইনলিস্ট জানায়, দেশটিতে বর্তমানে বৈধভাবে সাত থেকে আট হাজার বাংলাদেশি অবস্থান করছেন৷ বাংলাদশিসহ দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশের শ্রমিকদের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি৷

প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের বিষয়ে বলা হয়, ২০২৩ সালে ১২ হাজার ৩০০ বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা প্রদার করে ক্রোয়েশিয়া সরকার৷ এরমধ্যে আট হাজার কর্মী ক্রোয়েশিয়াতে প্রবেশ করেননি৷ পত্রিকাটির ধারণা, এই কর্মীরা ইউরোপের শেঙ্গেনভুক্ত অন্য কোনো দেশে চলে গিয়েছেন৷ আর বাকি চার হাজার ৪০০ কর্মীর অর্ধেক ক্রোয়েশিয়া থেকে পালিয়ে গিয়েছেন৷ শুধু বাংলাদেশিই নয়, পত্রিকাটি বলছে, ভারত নেপাল, ফিলিপাইন্স এবং মিশরের কর্মীদের অনেকেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন৷ তবে এই প্রবণতা বাংলাদেশিদের মধ্যে বেশি৷ 

পরিস্থিতি সামলাতে ক্রোয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাচাই বাচাইয়ের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে৷ ভিসার আবেদনকারীরা ক্রোয়েশিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে কি না এবং কোনো ঝুঁকি তৈরি করেবে কি না ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো আরো যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি৷

ক্রোয়েশিয়া উইক জানায়, বাংলাদেশ সরকারে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ক্রোয়েশিয়া সরকার৷

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণায়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাদ্যমটি জানায়, বাংলাদেশ সরকার সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নেবে৷

তথ্যসূত্র:  ইনফোমাইগ্রেন্টস -৩১.০১.২০২৫

Logo