
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) সম্প্রতি একটি নতুন অভিবাসন নীতি প্রস্তাব করেছে, যার লক্ষ্য প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। বর্তমানে, মাত্র ২০% প্রত্যাবাসনের আদেশ কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে, ইউরোপীয় কমিশন "ইউরোপীয় সিস্টেম ফর রিটার্নস" নামে একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেছে।
প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, একটি দেশ থেকে জারি করা প্রত্যাবাসনের আদেশ অন্য ইইউভুক্ত দেশেও কার্যকর হবে। এর ফলে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের পুরো ইইউভুক্ত অঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়া সহজ হবে।
ইইউ এর বাইরে তৃতীয় দেশে "রিটার্ন হাব" স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীদের রাখা হবে। এসব কেন্দ্রগুলো ইইউ এবং সংশ্লিষ্ট তৃতীয় দেশের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ বিবেচিত ব্যক্তিদের আটক রাখার সময়সীমা ১৮ মাস থেকে বাড়িয়ে ২ বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যাবাসনের আদেশ এড়িয়ে চলবে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হবে।
ইইউ অভিবাসন কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার বলেছেন, “যেকোনো উন্নতি স্বাগত, তবে আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করতে চাই না।” তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে, EU সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অবশ্যই অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশ ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্রুনার স্বীকার করেছেন যে এই বিষয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
এই নতুন পরিকল্পনাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো কড়া সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আশ্রয় আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষার পরিপন্থী হতে পারে।
Platform for International Cooperation on Undocumented Migrants (PICUM)-এর প্রতিনিধি সিলভিয়া কার্তা বলেন, “এর ফলে ইউরোপজুড়ে আরও বেশি মানুষ অভিবাসন আটককেন্দ্রে বন্দী হবে, পরিবারগুলো বিচ্ছিন্ন হবে এবং মানুষকে এমন দেশে পাঠানো হবে যেগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আশ্রয় প্রক্রিয়াকে দুর্বল করবে।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট