প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানা: ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩১

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নিয়ে আরো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। নতুন এক পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যেসব অভিবাসীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশ রয়েছে এবং তারা স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র না ছাড়লে তাদের প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানা করা হবে। সেই সঙ্গে জরিমানা না দিলে তাদের সম্পত্তি জব্দ করে বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রয়টার্সের হাতে আসা সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী, এই নীতি বাস্তবায়নে প্রশাসন ১৯৯৬ সালের এক পুরনো আইনকে পুনরায় সক্রিয় করছে, যা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে সীমিতভাবে প্রয়োগ হয়েছিল।
প্রশাসনের এক উচ্চপদের কর্মকর্তা জানান, এই জরিমানা পাঁচ বছর পর্যন্ত পূর্ববর্তী সময়ের জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে, অর্থাৎ একজন অভিবাসীর উপর ১০ লাখ ডলারেরও বেশি জরিমানা আরোপ হতে পারে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিশা ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেন,“অবৈধ অভিবাসীদের উচিত এখনই ‘CBP Home’ অ্যাপ ব্যবহার করে দেশ ছেড়ে যাওয়া। অন্যথায়, তাদের প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানার মুখে পড়তে হবে।”
এছাড়া অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিষয়েও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র। জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থদের ক্ষেত্রে সিভিল অ্যাসেট ফরফিচার ইউনিটের মাধ্যমে সম্পদ জব্দ করে নিলামে তোলার প্রস্তুতি চলছে।
এই নীতির আওতায় পড়বেন তারা, যাদের বিরুদ্ধে অভিবাসন আদালত থেকে চূড়ান্ত বহিষ্কারের আদেশ রয়েছে। সংখ্যায় এই অভিবাসীর পরিমাণ প্রায় ১৪ লাখ।
অভিবাসন সংক্রান্ত গবেষণা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন FWD.us বলছে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় এক কোটি ‘মিক্সড স্ট্যাটাস’ পরিবারকে প্রভাবিত করতে পারে, যেখানে কিছু সদস্য অভিবাসী হলেও অন্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা।
প্রাক্তন প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্কট শুচার্ট বলেন, “এই জরিমানা বাস্তবায়নের চেয়ে ভয় দেখানোই বেশি উদ্দেশ্য। এটি একটি আতঙ্ক তৈরির কৌশল।”
ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে প্রথম কয়েকজন গির্জায় আশ্রয় নেওয়া অভিবাসীর বিরুদ্ধে লাখ ডলারের জরিমানা আরোপ করেছিল। পরে সেগুলো কমিয়ে আনা হলেও এই বার্তা দিয়েই যাত্রা শুরু করেছিল তার অভিবাসন নীতির কঠোরতা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের পরিকল্পনা মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থার মানবিক দিককে আরো সংকুচিত করবে এবং ভবিষ্যতে এটি রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে রূপ নিতে পারে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স