বাণিজ্যযুদ্ধের ধাক্কা: কানাডায় চাকরি গেছে ৩৩হাজার জনের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৭

কানাডায় মার্চ মাসে ৩৩ হাজার চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে, যা গত তিন বছরে শ্রমবাজারের জন্য সবচেয়ে খারাপ মাস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকির কারণে ব্যবসায়িক আস্থা কমে যাওয়ায় এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া কমে যাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তবে চাকরি হারানো লোকদের জন্য কানাডায় এমপ্লয়মেন্ট ইন্স্যুরেন্স (ই আই) প্রোগ্রামের সুযোগ পাবেন চাকরি হারানো কর্মীরা।
গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত স্ট্যাটিসটিকস কানাডার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ বিশ্লেষকদের আশা ছিল, এই মাসে সামান্য হলেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।
কারণ, কানাডার প্রকৃতিতে সামার সিজন আসার আগ থেকে ফল সিজন থাকা পর্যন্ত শ্রমবাজারে নতুন অনেক চাকরির সৃষ্টি হয়। এবার সিজনাল চাকরিগুলো শুরু হলেও আমেরিকার শুল্কনীতির কারণে অনেক চাকরি চলে গেছে।
মার্চের শ্রমবাজার জরিপ (Labour Force Survey), যা ৯ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত শ্রমিকদের অবস্থা বিশ্লেষণ করেছে। এটি প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডার বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব ফুটে উঠেছে।
যদিও মার্চ ও এপ্রিলে কানাডিয়ান পণ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করেছে, যা ইউএসএমসিএ (United States-Mexico-Canada Agreement) চুক্তির শর্ত পূরণ করেনি, এখনো সরাসরি শুল্কের প্রভাব পরিষ্কারভাবে শ্রমবাজারে প্রতিফলিত হয়নি। তবে শুল্কের হুমকিই কানাডার ভোক্তা ও ব্যবসায়িক আস্থাকে নাড়া দিয়েছে, ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি কমে গেছে এবং বিদ্যমান কর্মীদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে কানাডার শ্রমবাজারে আরো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ি শিল্পের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে এসব খাতে বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই হতে পারে।
চাকরি হারানো লোকদের জন্য কানাডায় একটি EI বা এমপ্লয়মেন্ট ইন্স্যুরেন্স (Employment Insurance) প্রোগ্রাম আছে। এটি কানাডায় ১৯৪০ সালে চালু হয়। কোনো কারণে কোনো কোম্পানি যদি কাউকে আর চাকরিতে না রাখতে পারে; এমনকি সরকারও যদি কাউকে চাকরিতে না রাখতে পারে, তখন তারা এই সুবিধা পায়। এক-একজন কর্মী ৪৫ সপ্তাহ পর্যন্ত এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে চাকরি চলে যাওয়া কর্মীরা আগামী ৪৫ সপ্তাহ পর্যন্ত মোটামুটি স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাতে পারবেন চাকরি না করেও।
তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো